১০:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৮ জন ভারতীয় নাগরিক ও ৯ টি কোম্পানির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:৫৮:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
  • / ১৮ Time View

ইরানের ওপর ‘সর্বাধিক অর্থনৈতিক চাপ’ প্রয়োগের নীতির অংশ হিসেবে ভারত-ভিত্তিক ৯টি কোম্পানি এবং ৮ জন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইরানের তেল, পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং পেট্রোকেমিক্যালস ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, সম্প্রতি ঘোষিত এই নিষেধাজ্ঞায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং অর্থ বিভাগের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ অফিস (ওএফএসি) মোট প্রায় ১০০ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাহাজকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ভারত ছাড়াও চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ৮টি ভারতীয় রাসায়নিক ও পেট্রোকেমিক্যাল ট্রেডিং কোম্পানির মধ্যে রয়েছে মুম্বাইভিত্তিক সিজে শাহ অ্যান্ড কোং, কেমোভিক, মোদি কেম, পারিকম রিসোর্সেস, ইনডিসোল মার্কেটিং, হ্যারেশ পেট্রোকেম, এবং শিব টেককেম। এছাড়া দিল্লি-ভিত্তিক বিকে সেলস করপোরেশনও এই তালিকায় রয়েছে। এই কোম্পানিগুলো গত কয়েক বছরে শত শত মিলিয়ন ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল আমদানি করেছে বলে অভিযোগ।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তালিকায় পাঁচজন ভারতীয় নাগরিকের নামও রয়েছে। তারা হলেন, কেমোভিকের পরিচালক পীযূষ মগনলাল জাভিয়া, ইনডিসোল মার্কেটিংয়ের পরিচালক নীতি উন্মেষ ভাট এবং হ্যারেশ পেট্রোকেমের পরিচালক কমলা কাসাত, কুনাল কাসাত ও পুনম কাসাত।

অন্যদিকে, ওএফএসির নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন বরুণ পুলা, আয়াাপ্পান রাজা এবং সোনিয়া শ্রেষ্ঠা। তাদের বিরুদ্ধে ইরানি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) পরিবহনকারী জাহাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। সোনিয়া শ্রেষ্ঠার মালিকানাধীন মুম্বাইভিত্তিক শিপিং ফার্ম ভেগা স্টার শিপ ম্যানেজমেন্ট এবং এর মালিকানাধীন কমোরোস-পতাকাবাহী জাহাজ ‘নেপটা’-ও নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। এই জাহাজটি ইরান থেকে পাকিস্তানে এলপিজি পরিবহন করেছে বলে ওএফএসি জানিয়েছে। বরুণ পুলা ও আয়াাপ্পান রাজার মালিকানাধীন জাহাজও চীন ও পাকিস্তানে ইরানি এলপিজি পরিবহনে যুক্ত ছিল বলে জানা যায়।

মার্কিন অর্থ বিভাগের সচিব স্কট বেসেন্ট মন্তব্য করেছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা ইরানের অর্থপ্রবাহকে দুর্বল করছেন, যা প্রশাসন মনে করে যে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে অর্থায়নের কাজে ব্যবহৃত হয়।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বা মার্কিন নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণাধীন নিষিদ্ধ ব্যক্তি ও সংস্থাগুলোর সকল সম্পত্তি জব্দ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও অস্থিতিশীল কার্যক্রমে অর্থায়নকারী ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

৮ জন ভারতীয় নাগরিক ও ৯ টি কোম্পানির উপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা

Update Time : ১০:৫৮:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫

ইরানের ওপর ‘সর্বাধিক অর্থনৈতিক চাপ’ প্রয়োগের নীতির অংশ হিসেবে ভারত-ভিত্তিক ৯টি কোম্পানি এবং ৮ জন ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইরানের তেল, পেট্রোলিয়াম পণ্য এবং পেট্রোকেমিক্যালস ব্যবসায় জড়িত ছিলেন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বলছে, সম্প্রতি ঘোষিত এই নিষেধাজ্ঞায় মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এবং অর্থ বিভাগের বৈদেশিক সম্পদ নিয়ন্ত্রণ অফিস (ওএফএসি) মোট প্রায় ১০০ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও জাহাজকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ভারত ছাড়াও চীন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ৮টি ভারতীয় রাসায়নিক ও পেট্রোকেমিক্যাল ট্রেডিং কোম্পানির মধ্যে রয়েছে মুম্বাইভিত্তিক সিজে শাহ অ্যান্ড কোং, কেমোভিক, মোদি কেম, পারিকম রিসোর্সেস, ইনডিসোল মার্কেটিং, হ্যারেশ পেট্রোকেম, এবং শিব টেককেম। এছাড়া দিল্লি-ভিত্তিক বিকে সেলস করপোরেশনও এই তালিকায় রয়েছে। এই কোম্পানিগুলো গত কয়েক বছরে শত শত মিলিয়ন ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল আমদানি করেছে বলে অভিযোগ।

পররাষ্ট্র দপ্তরের তালিকায় পাঁচজন ভারতীয় নাগরিকের নামও রয়েছে। তারা হলেন, কেমোভিকের পরিচালক পীযূষ মগনলাল জাভিয়া, ইনডিসোল মার্কেটিংয়ের পরিচালক নীতি উন্মেষ ভাট এবং হ্যারেশ পেট্রোকেমের পরিচালক কমলা কাসাত, কুনাল কাসাত ও পুনম কাসাত।

অন্যদিকে, ওএফএসির নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছেন বরুণ পুলা, আয়াাপ্পান রাজা এবং সোনিয়া শ্রেষ্ঠা। তাদের বিরুদ্ধে ইরানি তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) পরিবহনকারী জাহাজের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। সোনিয়া শ্রেষ্ঠার মালিকানাধীন মুম্বাইভিত্তিক শিপিং ফার্ম ভেগা স্টার শিপ ম্যানেজমেন্ট এবং এর মালিকানাধীন কমোরোস-পতাকাবাহী জাহাজ ‘নেপটা’-ও নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। এই জাহাজটি ইরান থেকে পাকিস্তানে এলপিজি পরিবহন করেছে বলে ওএফএসি জানিয়েছে। বরুণ পুলা ও আয়াাপ্পান রাজার মালিকানাধীন জাহাজও চীন ও পাকিস্তানে ইরানি এলপিজি পরিবহনে যুক্ত ছিল বলে জানা যায়।

মার্কিন অর্থ বিভাগের সচিব স্কট বেসেন্ট মন্তব্য করেছেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তারা ইরানের অর্থপ্রবাহকে দুর্বল করছেন, যা প্রশাসন মনে করে যে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীকে অর্থায়নের কাজে ব্যবহৃত হয়।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বা মার্কিন নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণাধীন নিষিদ্ধ ব্যক্তি ও সংস্থাগুলোর সকল সম্পত্তি জব্দ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও অস্থিতিশীল কার্যক্রমে অর্থায়নকারী ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিযানের প্রধান উদ্দেশ্য।