বিদ্যালয়ের মাঠের মাটি কেটে হচ্ছে শিশুপার্ক

- Update Time : ০৯:২১:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / ১৯ Time View
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে দুই বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ থেকে মাটি তুলে গভীর গর্ত করার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানেই এসব মাটি উত্তোলন চলছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে প্রশাসনের দাবি, ওই মাঠের মাটি কেটে নির্মাণ করা হচ্ছে শিশুপার্ক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২০/২৫ দিন আগে উপজেলার চর আষাড়িয়াদহের কানাপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠের মাটি কেটে অন্যত্র ফেলা হয়। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বয়ং দাঁড়িয়ে থেকে মাঠ থেকে মাটি তুলে স্কুলের আর একটি খাল ভরাট করেছেন। এতে স্কুলের মাঠে প্রায় গভীর গর্ত তৈরি হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে সেই গর্ত এখন গভীর পুকুরে রূপ নিয়েছে। ফলে চারপাশের মাটি ধস এবং সরকারের অর্থায়নে নির্মিত বিদ্যালয়ের দুটি ভবনও ঝুঁকিতে পড়েছে
স্থানীয় বাসিন্দা আঙ্গুর হোসেন বলেন, হঠাৎ করে এখানে এত বড় গর্ত খোঁড়া হলো কেন, আমরা কিছুই জানি না। স্কুলের বাচ্চারা যে কোনো সময় এখানে ডুবে প্রাণ হারাতে পারে। দুই স্কুলের পাশে এই খনন কাজ অত্যন্ত বিপজ্জনক। আমরা চাই, দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
চর আষাড়িয়াদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আফতাব উদ্দিন বলেন, আমি ইউএনও স্যারকে বলেছিলাম, এখান থেকে মাটি না তুলে অন্য জায়গা থেকে আনলে ভালো হয়। তখন তিনি আমাকে বলেন, ‘আমি আপনাকে বলছি যে, এখানে পরবর্তীতে মাটি ভরাট করে দেব। তাহলে সমস্যা কোথায়?’
তিনি আরও বলেন, এটা তো আমার অফিসকে অবগত না করে পারমিশন দিতে পারি না। তখন তিনি (ইউএনও) বলেন, ’আমি ইউএনও বলছি। আপনি আমার ওপরে আস্তা রাখতে পারছেন না?’ আমার জায়গা থেকে আমি যথেষ্ট চেষ্টা করেছিলাম যে অন্য কোথাও থেকে মাটি এনে ফেলা হোক।
এ বিষয়ে কানাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আজগর আলী বলেন, আমাকে চেয়ারম্যান সাহেব বলেছেন, ‘সরকারি কাজের জন্য এখানকার মাটি তোলা লাগবে।’ আমি তাকে বলেছিলাম অন্য জায়গা থেকে ব্যবস্থা করার জন্য। তবে তিনি আমার কথা শুনেননি। তিনি এখান থেকে মাটি তুলেছেন, আর প্রথমে আমি জানতাম জায়গাটা গভীর কম হবে কিন্তু পরে দেখলাম জায়গাটা বেশ গভীর হয়েছে। যার ফলে আমার প্রতিষ্ঠান একটু হলেও ঝুঁকিতে আছে।
এ বিষয়ে গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ফয়সাল আহমেদকে কল দিলে প্রথমে পুরো বিষয়টি অজানা বলে দাবি করেন। জেনে জানাচ্ছি বলে কল কেটে দেন। কিছুক্ষণ পর কল দিয়ে তিনি আবারও পুরো বিষয়টি জানতে চেয়ে বলেন, ‘ওটা স্পটে গিয়ে বলতে পারবো কি অবস্থা।
এরপর তিনি আবারও কল দিয়ে বলেন, আমরা চর আষাড়িয়াদহে একটা শিশু মিনি পার্ক করবো। আমরা স্কুলের সামনে একটা নিচু জায়গা নির্ধারণ করছি। বর্ষার জন্য কাজ করা যাচ্ছে না, তাই একটু মাটি দিয়ে যেন খেলনাগুলো বসাতে পারি। আমরা যখন প্রকল্প নিয়ে যাবো তখন সেখানে ভরাট করে দেব, এরকম পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু চেয়ারম্যান সাহেব মনে হয় গভীর বেশি করে ফেলছে। এটা আমরা চেয়ারম্যান সাহেবকে বলেছি ব্যবস্থা নিতে, ব্যবস্থা নিবেন উনি।